প্রাচীন বাংলায় আপনাকে স্বাগতম! আপনার পছন্দের পণ্য এখনি বেছে নেন। X

মশার কামড়ে নয়, হোক জ্ঞান আর সতর্কতার প্রতিরোধ!

By Tareak Aziz 27 Views May 30, 2025
মশার কামড়ে নয়, হোক জ্ঞান আর সতর্কতার প্রতিরোধ!

ডেঙ্গু জ্বর: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও করণীয় | একটি পূর্ণাঙ্গ গাইড

 ভূমিকা


বর্তমান সময়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে ডেঙ্গু জ্বর একটি বড় স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যায় এবং অনেক মানুষ এতে আক্রান্ত হন। সঠিক সচেতনতা, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, এবং দ্রুত চিকিসার মাধ্যমে এই রোগ থেকে বাঁচা সম্ভব। এই ব্লগে আমরা বিস্তারিতভাবে জানব — ডেঙ্গু কী, কীভাবে ছড়ায়, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিসা।


 ডেঙ্গু কী?


ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত জ্বর, যা Aedes aegypti ও Aedes albopictus নামক মশার কামড়ে ছড়ায়। এই ভাইরাসটি “Flavivirus” পরিবারভুক্ত এবং ৪টি প্রকারভেদ আছে: DENV-1, DENV-2, DENV-3 ও DENV-4।


 কীভাবে ছড়ায়?


ডেঙ্গু ছড়ায় ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী মশার মাধ্যমে। এই মশা সাধারণত:


ভোরবেলা ও সন্ধ্যার দিকে বেশি সক্রিয় থাকে


পরিষ্কার জমে থাকা পানিতে (যেমন ফুলের টব, টায়ার, ড্রাম) জন্মায়


ঘরের ভিতর বা আশেপাশে থাকে


একজন আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড়ানোর পর, মশাটি ভাইরাস বহন করে এবং অন্য কাউকে কামড় দিলে সেও আক্রান্ত হতে পারে।


 ডেঙ্গুর লক্ষণসমূহ


সাধারণত ডেঙ্গু ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার ৪-১০ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দেয়। প্রধান লক্ষণগুলো হল:


হঠাৎ করে উচ্চ জ্বর (১০২–১০৫°F)


মাথা ব্যথা


চোখের পিছনে ব্যথা


মাংসপেশি ও হাড়ে ব্যথা (এইজন্য একে “breakbone fever” ও বলা হয়)


গাঁটে গাঁটে ব্যথা


চুলকানি সহ শরীরে র‍্যাশ


বমিভাব বা বমি


গাম বা নাক থেকে রক্তপাত (গুরুতর ক্ষেত্রে)


 গুরুতর লক্ষণ (Dengue Hemorrhagic Fever):

রক্তচাপ কমে যাওয়া


রক্তপাত হওয়া


অজ্ঞান হওয়া


পানিশূন্যতা


এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।


 ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়

১. মশার জন্মস্থান ধ্বংস করুন


সপ্তাহে অন্তত একবার জমে থাকা পানি ফেলে দিন


ফুলের টব, ডাবের খোসা, প্লাস্টিক বোতল, টায়ার পরিষ্কার রাখুন


পানি ঢেকে রাখুন


২. ব্যক্তিগত সুরক্ষা


ফুলহাতা জামা-প্যান্ট পরুন


মশারী ব্যবহার করুন


মশা নিরোধক ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করুন


ঘরে ও আশেপাশে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করুন


৩. সচেতনতা বৃদ্ধি


পরিবার, স্কুল, কর্মস্থলে সচেতনতা মূলক আলোচনা করুন


ডেঙ্গু নিয়ে প্রচারণা চালান


 চিকিসা ও করণীয়


ডেঙ্গুর এখনো নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক নেই, তবে সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।


করণীয়:


পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন


তরল খাবার (ORS, ফলের রস, স্যুপ, পানি) বেশি করে খান


প্যারাসিটামল সেবন করুন (জ্বর কমানোর জন্য)


বর্জনীয়:


কোনভাবেই অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন খাওয়া যাবে না — এতে রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ে


গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে হাসপাতালের শরণাপন্ন হোন।


ডেঙ্গু পরিস্থিতি (বাংলাদেশ প্রসঙ্গে)


বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকা শহরে প্রতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে কয়েক লক্ষ। এর পেছনে প্রধান কারণ:


অপর্যাপ্ত মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা


জনগণের অসচেতনতা


নগরায়ণের ফলে জন্মানো অগোছালো পরিবেশ


উপসংহার


ডেঙ্গু একটি প্রাণঘাতী রোগ হলেও, কিছু সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এই রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। নিজে সচেতন হই, অন্যকেও সচেতন করি। মনে রাখুন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব — যদি আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করি।


 আপনি কী করবেন?


এই ব্লগটি আপনার বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করুন

নিজের এলাকায় সচেতনতা বাড়ান

 স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন